মৃত্যু ঝুঁকি কমায় বিআরটিএ’র প্রতি কৃতজ্ঞ সিএনজি চালকরা

শেষ দফায় মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি স্ক্র্যাপ সম্পন্ন চট্টগ্রাম বিআরটিএতে

Passenger Voice    |    ০২:৫৪ পিএম, ২০২৩-০৫-২৭


শেষ দফায় মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি স্ক্র্যাপ সম্পন্ন চট্টগ্রাম বিআরটিএতে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রাম মহানগরীর সিএনজি/থ্রি হুইলার সার্ভিস নীতিমালা ২০০৭ এর আওতায় ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ১৩ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিবন্ধন দিয়েছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)’র চট্টমেট্রো সার্কেল। এসব গাড়ির ইকোনমি লাইফ (আয়ুষ্কাল) ধরা হয় ১৫ বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২০১৮ সাল থেকে গাড়িগুলো ধাপে ধাপে স্ক্র্যাপ করা শুরু করে বিআরটিএ। শেষ ধাপে গতকাল ১৩৪টি সিএনজি স্ক্র্যাপ করা হয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১২ হাজার ৮৪৮ টি সিএনজি অটোরিক্সা স্ক্র্যপ করণ শেষে নতুন নাম্বার প্রদান করেছে বিআরটিএ। 

বিআরটিএ চট্টমেট্রো সার্কেল-১ অফিসের উপ–পরিচালক তৌহিদুল হোসেন বলেন, গতকাল ১৩৪টি সিএনজি চালিত অটোরিকশা স্ক্র্যাপ করা হয়েছে। এখানে ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মডেলের সিএনজি রয়েছে। আগেও আমরা স্ক্র্যাপ করেছিলাম, যেগুলো বাকি ছিল তা আজকে করা হয়েছে। এখন আর বাকি নাই। তিনি বলেন, অনেক গাড়ির মালিক বিদেশে ছিলেন। আবার অনেকে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে না আসায় স্ক্র্যাপ করতে পারেননি। তাদের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে সর্বশেষ স্ক্র্যাপ করা হয়েছে।

সূত্র বলছে, নিবন্ধনের সময়ে ১৩ হাজার সিএনজি অটোরিকশার ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করা হয়েছিল ১১ বছর। পরে মালিকদের দাবির প্রেক্ষিতে তা ১৫ বছরে উত্তীর্ণ করা হয়। পরবর্তীতে বর্ধিত মেয়াদও শেষ হওয়ার পর এই সিএনজি অটোরিকশা গুলো স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নেয় বিআরটিএ। এর অংশ হিসেবে ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ মডেলে প্রস্তুতকৃত এমন সাড়ে আট হাজার সিএনজি অটোরিকশা ২০১৮ ও ২০১৯ সালে প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়। ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন হাজার ৯৪৪টি স্ক্র্যাপ করা হয়। এ দফায় স্ক্র্যাপ করা হয় ২০০৪ ও ২০০৫ সালে প্রস্তুতকৃত সিএনজি চালিত অটোরিকশা। এরপর ২০২২ সালের মে মাসে ৩৫৫টি স্ক্র্যাপ করা হয়। সর্বশেষ বাকি থাকা সিএনজিগুলো গতকাল স্ক্র্যাপ করা হল।

চট্টগ্রাম অটোরিকশা-অটোটেম্পু চালক শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজিঃ নং-২৬৫৯) এর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত নিবন্ধন দেয়া সিএনজি অটোরিকশা গুলো যখন মেয়াদোর্ত্তীন্ন ছিল তখন চালকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সিএনজি চালাতে হতো। এইসব মেয়াদোর্ত্তীন্ন সিএনজি অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অনেক চালক আহত হয়েছিল। বিআরটিএর এই উদ্যোগে আজ চালকরা ঝুঁকি মুক্ত ভাবে জীবন যাপনের সুযোগ পেয়েছে। 

সিএনজি ও বেবিট্রেক্সি চালক-সহকারী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন,  আয়ুষ্কাল ফুরিয়ে যাওয়া সিএনজি চালিত অটোরিকশা স্ক্র্যাপ করায় জীবনের ঝুঁকি কমেছে চালকদের। ‘আমাদের হিসাবে ১৩ হাজারের মধ্যে সবগুলো গাড়ি স্ক্র্যাপ করা হয়েছে। ইকোনমিক লাইফ শেষ হওয়ায় এগুলো স্ক্র্যাপ করা হয়েছে, তাই এখন থেকে আর কোনো ঝুঁকি নেই।’

সাধারণ জনগণ মনে করেন, মেয়াদ চলে যাওয়ায় সিএনজি চালিত অটোরিকশাগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। বিভিন্ন সময়ে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ গত ২৪ এপ্রিল নগরের শাহ আমানত সেতু এলাকায় চলন্ত সিএনজি অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একই পরিবারের পাঁচজন হতাহত হয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে বন্দর থানার কলসীর দীঘি এলাকা এবং চান্দগাঁও এলাকায় এ ধরনের দুর্ঘটনায় প্রাণহানিও ঘটে। উপজেলা পর্যায়ে এ রকম অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে।